স্টাফ রিপোর্টার- জাহারুল ইসলাম জীবন।
মাগুরায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে আট বছর বয়সী এক শিশু। গত ৬ মার্চ নিজ বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া। দীর্ঘ চিকিৎসার পর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
ঘটনার বিবরণঃ-** আছিয়া তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে বোনের শ্বশুর, স্বামী ও স্বামীর বড় ভাই মিলে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে।ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
** সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
** সিএমএইচের আইসিইউতে কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত আজ ১৩/০৩/২০২৫ ইং দুপুর ১-টায় মৃত্যুর কাছে হার মানে শিশু আছিয়া।
** শিশুটির মরদেহ সামরিক হেলিকপ্টারে করে মাগুরা স্টেডিয়ামে আনা হয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আজ রাত ১০-৩০ মিনিটে মাগুরা স্টেডিয়ামে মৃত্য শিশু আছিয়ার জানাজা শেষ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পরবর্তীতে শিশু আছিয়ার মরদেহ তার নিজ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
পরিবারের অভিযোগ:
** আছিয়ার বড় বোন অভিযোগ করেন, তাকেও তার শ্বশুর ও স্বামীর বড় ভাই প্রায়ই ধর্ষণ করত।
** প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, তার স্বামী হয়তো এমন কাজ করছেন। পরে জানতে পারেন, শ্বশুর ও ভাসুর তাকে ধর্ষণ করছেন।
** তিনি তার শাশুড়িকে বিষয়টি জানালে তাকে চুপ থাকতে বলা হয় এবং তালাকের হুমকি দেওয়া হয়।
** রমজান মাসে আছিয়াকে বোনের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল, যাতে সে তার বোনকে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সেখানেই সে নিজেই পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়।
** আছিয়ার বোন আরও জানান, ঘটনার রাতে সম্ভবত তাকে কিছু খাওয়ানো হয়েছিল, যার কারণে তিনি কিছুই টের পাননি।
আইনগত পদক্ষেপঃ-
** এ ঘটনায় শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
** পুলিশ শিশুটির বোনের শ্বশুর, ভগ্নিপতি, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেফতার করেছে।
**প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর প্রফেসর ইউনুস সহ অধিকাংশ উপদেষ্টা মন্ডলী সহ সমগ্র দেশে ও বিদেশের সর্বসূধী মহল,ছাত্র সমাজ ও মানবাধিকার এবং আইন সহকারী সংস্থা সমূহ্ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
জনমনে ক্ষোভঃ-
** এই নির্মম ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
** বিভিন্ন মহল থেকে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে।
** শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
এই নিউজ লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আছিয়ার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল বাহির করে সাধারণ আমজনতা ও ছাত্র সমাজ ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করতেছেন এবং শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারী বড় বোনের শশুর স্বামীর এবং ভাসুরের বাড়িঘর সাধারণ জনতা অগ্নি সংযোগ করে ভূষ্মিত করে দিয়েছেন।
এই ঘটনাটি দেশ ও সমাজের জন্য একটি জঘন্য চিত্র বলে সর্বমহল তুলে ধরেছে। শিশু এবং নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।