দৈনিকচৌকস : নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর সূচনা চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে। গত বছরের একেবারে শেষ সময়ে চীন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সংক্রমণের কথা জানায়। এরপর প্রাণঘাতী এ ভাইরাস চীনের সীমানা ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, চীন সরকার ডিসেম্বরের শেষে করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করলেও উহানে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটেছে গত বছরের আগস্টে। স্বনামধন্য হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের শুরু নিয়ে চলমান বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। যদিও চীন সরকার এ ধরনের কোনো তথ্যের সত্যতা ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। খবর রয়টার্স ও সিএনবিসি। গত বছরের আগস্ট মাসে উহানের হাসপাতালগুলোয় মানুষের যাতায়াতের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করেছেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা। একই সঙ্গে ওই সময় জনবহুল এ শহরটিতে মানুষের ইন্টারনেট সার্চের প্রবণতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আর এ দুই ধরনের তথ্যের মিশেলে হার্ভার্ডের গবেষণায় বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টেই উহানের মানুষের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। যদিও চীন সরকার ডিসেম্বরের শেষে এসে বিষয়টি স্বীকার করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছরের আগস্টের দিকেই উহানের অধিবাসীদের ইন্টারনেটে কফ ও ডায়রিয়া থেকে উপশমের উপায় খোঁজার প্রবণতা বেশি ছিল। তারা এ দুটি বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে সবচেয়ে বেশি। পরবর্তী সময়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের এ দুটি উপসর্গ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। একই সময়ে উহানের হাসপাতালগুলোয় মানুষের যাতায়াত হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময়ের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এ তথ্য উদঘাটন করেছেন হার্ভার্ডের গবেষকরা। মূলত এ দুটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে আগস্টেই উহানে করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তবে তথ্য-উপাত্ত সেদিকেই ইঙ্গিত দেয়। কেননা, ওই সময় উহানে সর্দি-কাশি-জ্বরের মৌসুম ছিল না। কিন্তু স্থানীয়রা এসব উপসর্গ থেকে উপশমের উপায় খুঁজেছে। হাসপাতালে গিয়েছে। এর আগে কিছু কিছু গবেষণায় উঠে এসেছিল, করোনাভাইরাস প্রাকৃতিকভাবেই চীনে ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেক গবেষক বলেছিলেন, উহানের সি ফুড মার্কেটে কোনো সামুদ্রিক প্রাণী থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এ গবেষণা প্রথম মতকে সমর্থন করলেও পরের তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। তবে যারা শুরু থেকেই বলে আসছেন করোনা নিয়ে চীন তথ্য গোপন করেছে, তাদের কাছে হার্ভার্ডের এ গবেষণা সাড়া ফেলেছে। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুললেও হার্ভার্ডের এ গবেষণার ফলাফল মানতে নারাজ চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা খুবই হাস্যকর। যে পদ্ধতিতে ও যেসব উপাত্তের ভিত্তিতে (হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া) এ গবেষণা করা হয়েছে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। করোনা সংক্রমণের সূচনার বিষয়ে চীন আগের অবস্থানেই রয়েছে। উল্লেখ্য, এ প্রতিবেদন লেখা অবধি বিশ্বজুড়ে ৭১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি। কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪ লাখ ৭ হাজার ৯ জন। > অনলাইন ডেস্ক
Continue Reading